6/recent/ticker-posts

ভোলায় লোকসানের মুখে চামড়া ব্যবসায়ীরা


ভোলা টুডে রিপোর্ট॥
লাভের আশায় গত বছর চামড়া কিনেছি. কিন্তু লাভ তো দুরের কথা চালান পর্যন্ত উঠেনি, এ বছরও চামড়া কিনে লোকসানের মুখে। গত এবং এ বছর মিলিয়ে দুই বছরে ১৪ লাখ টাকার চামড়া কিনে চরম ক্ষতির মুখে রয়েছি’। ক্ষোভের সাথে এ কথাগুলোই বলছিলেন চামড়া আড়ৎদার ইসমাইল হোসেন।
তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ব্যবসায়ে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। একদিকে লবনের দাম বেশী অন্যদিকে পাইকারী আড়তে চামড়ার কম থাকায় চামড়া নিয়ে চরম সংকটের মধ্যে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কোরবানির পর ৮দিন পেরিয়ে গেলেও গরুর চামড়া কেউ বিক্রি করেননি, এভাবে চলতে থাকলে অবশেষে চামড়া পচে নষ্ট হয়ে  যেতে পারে।



চামড়া কিনে এমন সংকটে শুধু ইসমাইল হোসেন নয়, তার মত একই অবস্থা ইউসুফ, নুর উদ্দিন, মেস্তাকিম, আ: মালেক, কামাল হোসেন ও ফারুকসহ অন্যদেরও।
এ মৌসুমে একদিকে চামড়া বাজার মন্দা অন্যদিকে লবনের দাম বেড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন ভোলার চামড়া ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, পাইকারী বাজারে দাম কম অন্যদিকে টেনরি মালিকরা চামড়া কিনলেও বাকিতে চামড়া নিতে চায়, তাই অনেকেই চামড়া বিক্রি থেকে বিরত রয়েছেন।
ভোলা জেলা সদরসহ জেলার সাত উপজেলার শতাধিক চামড় ব্যবসায়ী ও অর্ধশতাধিক আড়ৎ থাকলেও এ বছর চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। কারন, শুরুতে বেশী দাম দিয়ে চামড়া কিনে সেই দাম পাবেন কিনা তা নিয়ে চরম অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেলো, গত বছর যেখানে চামড়ার দাম ছিলো প্রতি পিস ৩০০/৩৫০ টাকা সেই চামড়াই এ বছর কিনতে হয়েছে ৫০০ টাকা দরে। তার মধ্যে আবার লবন ও শ্রমিক খরচ মিলিয়ে চামড়ার দাম পড়েছে প্রায় ৭০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু পাইকারী বাজারে চামড়ার দাম ৭০০/৮০০’শ টাকার মত। এতে লাভ  হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ব্যবসায়ীরা আরো জানান, গত বছর প্রতি বস্তা লবনের মূল্য ছিলো ১২ টাকা বর্তমানে লবন বিক্রি হচ্ছে ১৫’শ টাকা দরে। সেখানে চাড়মার দাম বেড়েছে সেখানে লবনের দামও। তাই লাভ তো দুরের কথা লোকসান গুনতে হবে অনেক ব্যবসায়ীদের।
ভোলা শহরের কালিনাথ রায়ের বাজারের চামড়া আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা লবন দিয়ে চামড়া প্রস্তুত করছেন। বেশীরভাগ আড়ৎড়লোতে চামড়া টাল দিয়ে সাজানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা চামড়া প্রস্তুত করে মজুত করে রেখেছেন। কেউ বিক্রি করলেও অনেকেই  চামড়া বিক্রি করেননি। ঈদের পর থেকে কেটে গেছে ৮ দিন। গত বছর এমন দিনে চামড়ার কেনা-বেচা জমে উঠলেও লোকসানের চিন্তায় অনেকেই চামড়া বিক্রি করেননি।
চামড়া আড়ৎদার সমিতির সাধারন সম্পাদক মো: ইউসুফ বলেন, গত বছর লোকসান হওয়াতে এ বছর মাত্র ৩৫০টি চামড়া কিনেছি, পাইকারী আড়তে এখণ দাম কম তাই বিক্রি না করে আড়তেই চামড়া রাখা হয়েছে। বাজারে দাম বাড়লে বিক্রি করবো নয়ত, কয়েকদিন পর লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বেশীরভাগ চামড়া ব্যবসায়ীর একই অবস্থা। চামড়া বিক্রি না করে বেশী দামের আশায় মজুদ করে দিয়েছেন ব্যবাসয়ীরা। আগামী দুই মাসের মধ্যে চামড়া বিক্রি করতে না পারলেও এসব চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। গরুর চামড়ার মত একই অবস্থা ছাড়লেও চামড়ারও।

Post a Comment

0 Comments