6/recent/ticker-posts

আর কতো কাল বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদবে?


সালেহ্ রনক।।

১৭ মে।
বন্ধু হারানোর দিন,বড় বেদনার দিন।
গতবছর এই দিনে দুইবাসের প্রতিযোগিতায় প্রাণ হারায় প্রিয় বন্ধু নাজিম। সেই থেকে শোক আর আক্ষেপ নিয়ে দিন পার করছি।পাশ থেকে হঠাত করে পরিচিত কেউ চলে গেলে আমরা মর্মাহত হই।আর যখন অকালে পাশ থেকে প্রিয় কোন বন্ধু কারো হত্যার শিকার হয়ে বিদায় নেয়,সেই শূন্যতা,কষ্ট হৃদয়কে বিদীর্ণ করে প্রতিনিয়ত। নাজিম হত্যা আমাকে এতটাই আঘাত করেছিল,ক্ষুব্দ করেছিলো যে,ক্রোধে রাগে একা নিজেই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম ন্যায় বিচারের দাবি নিয়ে ঢাকা প্রেস ক্লাবের সামনে। সেই দুঃখবোধ,শূন্যতা আমাকে আজীবন তাড়িয়ে বেড়াবে।১৭ মে দুঃখের দিন,স্বজন হারানোর দিন হিসাবেই জীবনে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছে।

নাজিম যেদিন সড়কে দূর্ঘটনার নামে হত্যার শিকার হয় তার দিন দুয়েক আগে ওর ছোট মেয়ে মুনের জন্ম হয়।ছোট্ট মুন ঠিকমতো বাবার আদর স্নেহ পাওয়ার আগেই ঘাতক বাস ড্রাইভার কেড়ে নেয় নাজিমের প্রাণ। ছোট্ট মুনকে ঠিকমতো বুকে জড়িয়ে না নেয়ার আগেই পিতৃশূন্য হয় ওর দুই কন্যার বুক।অসময়ে স্বামী হারিয়ে নাজিমের স্ত্রীর কান্না এখনো থামেনি। কথা বলতে গেলেই কন্ঠ জড়িয়ে আসে,বেশি দূর কথা আগাতে পারি না।নানা অজুহাতে যতটা পারি নিজেকে নিয়ে পালিয়ে বাঁচি। আমরা ওর বন্ধুরা শোক ভুলতে পালিয়ে বেড়াই,শূন্যতা পূরণে ব্যস্ততায় লুকাই।নাজিমের স্ত্রী,কন্যা সন্তানেরা এই শোক ভুলবে কিভাবে,কোথায় লুকায়ে বাবার শূন্যতার হাহাকার লুকাবে?সমস্ত ঘরজুড়ে যে নাজিমের নানা স্মৃতি ওর উপস্থিতির বারংবার মনে করিয়ে দিচ্ছে।

নিষ্ঠুর, মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক শব্দগুলো সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এখন আর যেন কার্যকর নয়। বাংলাদেশে যেভাবে, যে হারে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, তাকে এখন আর অস্বাভাবিক বলার জো নেই। সড়কে মরতে হবে এই যেন এদেশের নাগরিকদের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা যেন মহামারি আকার ধারণ করেছে। একের পর এক কেড়ে নিচ্ছে কর্মজীবী মানুষের প্রাণ। কিন্তু এই নিয়ে যেন কারো মাথা ব্যথা নেই,কিছু করার নেই।প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ বেপরোয়া চালকদের নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছেন। এছাড়া রাজধানীসহ সারা দেশে দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরছে অসংখ্য মানুষের। প্রতিটি সড়ক দূর্ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটু সরব হয়,দৈনিক পত্রিকাগুলো খবর ছাপে,এরপর আবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়। সড়কে নতুন মৃত্যুর খবর পুরানো খবরকে চাপা দেয়,আমরাও ভুলে যাই।

নাজিম হত্যার পর নাজিমের বন্ধু বান্ধব শুভাকাঙ্ক্ষীরা ভেঙ্গে পড়ে।লালমোহন ফাউন্ডেশন প্রেসক্লাবে বিশাল মানববন্ধন করে। নাজিমের কর্মস্থল ঢাকা ট্রিবিউন শোক প্রকাশ করে। নাজিমের প্রিয় সংগঠন 'ঐকতান-৯২' লালমোহনে দীর্ঘ মানববন্ধন করে।এছাড়াও নাজিম হত্যার বিচারের দাবিতে ভোলা প্রেস ক্লাবের সামনে 'ঐকতান-৯২','বন্ধু-৯২' ও ভোলা জেলা নাগরিক ফোরাম যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন পালন করে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে দীর্ঘসময় ধরে লেখালেখি। প্রশাসন নড়চড়ে বসে,আসামীরা ধরা পড়ে।হাইকোর্ট ক্ষতিগ্রস্ত নাজিমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক কোটি টাকা প্রদানের জন্য রুল জারি করে। তারপর আস্তে আস্তে নাজিম হত্যার মামলাও সড়ক দূর্ঘটনার অন্য মামলাগুলোর ভাগ্য বরণ করে!আসামীরা জামিনে বের হয়ে আসে,হাইকোর্টের জারি করা রুল অকার্যকর হয়ে পড়ে থাকে।

প্রতিটি সড়ক দূর্ঘটনার পর একই চিত্রের বার বার মঞ্চস্থ হতে দেখতে দখতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।ঢাকায় দুর্ঘটনা ঘটলে যখন রাস্তা অবরোধসহ ভাঙচুর শুরু হয়,তখন দেশবাসী ও সরকারের কিছুটা দৃষ্টিগোচর হয়। পরবর্তী সময়ে নিহতের পরিবার থানায় মামলা করেন,কেউ কেউ তাও করেন না। কোন কোন ক্ষেত্রে চালককে আটক করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চালক পলাতক হয়ে যায়। এক সময় বিষয়গুলো চাপা পড়ে যায়। কেউ জানে না থানায় মামলা দেয়ার পর এই মামলার শেষ পরিণতি কি হয়। যে দুর্ঘটনাগুলো নিয়ে বেশি আলোচিত সেগুলোর রাতারাতি কিছু অস্থায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হয় কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকে। এখন কেন যেন মনে হয়, নাজিমের আলোচিত সড়ক দূর্ঘটনার মামলাও হালে কিছুটা পানি পেলেও তা ছিল মূলত তখনকার পরিস্থিতি সামাল দেয়ার কৌশলমাত্র। ঢাকা শহরের বাইরে জেলা, উপজেলা এবং গ্রাম পর্যায়ে যে সড়ক দুর্ঘটনা হয় সেগুলোর খবর অনেকেই রাখে না এবং তাদের নিয়ে তেমন কোন চিন্তাও করা হয় না।

দিন যত গড়াচ্ছে ততই আশাহত হয়ে পড়ছি সড়ক দূর্ঘটনার নামে নাজিম হত্যা নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুলের কার্যকারিতা নিয়ে। সড়ক দূর্ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টের করা জারি করা রুলের কার্যকারীতার কোন ভালো উদাহরণ সামনে নেই।বরং তার বিপরীতে আছে দীর্ঘ অপেক্ষা আর হতাশার করুণ উদাহরণ।দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মন্টু ১৯৮৯ সালে রাজধানীর শান্তিনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। তার মৃত্যুর পর পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা মামলায় ২৬ বছর পর চূড়ান্ত রায় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল দেওয়া ওই রায়ে মন্টুর পরিবারকে তিন কোটি ৫২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় দুর্ঘটনা সংঘটনকারী গাড়ির কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডকে। কিন্তু রায় হওয়ার প্রায় তিন বছর পরও ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে পাননি প্রয়াত মন্টুর স্ত্রী রওশন আখতার।

শুধু মোজাম্মেল হোসেনের পরিবার নয়, বহুল আলোচিত পাঁচটি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনায় করা ক্ষতিপূরণের মামলায় হাইকোর্ট যেসব আদেশ দিয়েছেন, সেসবও বাস্তবায়ন হয়নি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই হাইকোর্ট আদেশ দেওয়ার পর ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। কয়েকটি মামলায় আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখলেও আইনি মারপ্যাঁচে ফেলে বিষয়টি উচ্চ আদালতেই ঝুলিয়ে রাখারও নজির পাওয়া গেছে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় রায় বা আদেশ পেলেও ক্ষতিপূরণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকছে নিহতের পরিবার।
প্রয়াত বন্ধু নাজিমের ছোট ছোট সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে। যাদের ভবিয্যত আজ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এখন তাদের কি হবে? কে তাদের ভারণপোষণ ও মানুষ করার দায়িত্ব নেবে? এমন শত শত পরিবার রয়েছে, যারা সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে এক অনিশ্চিত জীবনের দিকে ধাবিত। চালক বেঁচে গিয়ে হয়ত তার পরিবার অনিশ্চয়তার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। কিন্তু তার কারণে যার বা যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের পরিবারগুলোর কি হয়েছে, তা কি কখনো রাস্ট্র,দেশের আইন আদালত ভেবে দেখেছে? স্থানীয় সাংসদ নূর নবী চৌধুরী শাওন এর আন্তরিক প্রচেষ্টা ও লালমোহন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নাজিম এর দুই সন্তান ও স্ত্রীর নামে ২০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করা হয়েছে।এই মহতী উদ্যোগের জন্য মাননীয় সাংসদ ও লালমোহন ফাউন্ডেশনকে জানাই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। কিন্তু প্রকৃতঅর্থে কি এই অর্থ কি তাদের ভবিষ্যত সুদৃঢ় করার জন্য যথেষ্ট?ব্যক্তি উদ্যোগ তো আর রাস্ট্রের কর্তব্য পালনের মধ্যে পড়ে না।নাজিম বেঁচে থাকলে একজীবনে এর চেয়ে অনেকবেশি ও বড় সাপোর্ট হতো পরিবারের জন্য।সন্তানের জন্য পিতার চেয়ে,স্ত্রীর জন্য স্বামীর চেয়ে বড় ভরসার জায়গা,নির্ভরতার জায়গা আর কি কিছু পৃথিবীতে আছে? এই ক্ষতিপূরণ কি আর কোন কিছু দিয়ে পূরণ করা সম্ভব?কিংবা অর্থই কি একজন স্ত্রীর জন্য কিংবা সন্তানের জন্য সবকিছু?

বিচারহীনতার এই দেশে ক্ষতিগ্রস্তদের বিচার পাওয়ার অধিকারও যেন নেই। রাষ্ট্র একটু আন্তরিক হলেই এদের বিচারের দায়িত্ব নিতে পারে। আইনের অপপ্রয়োগ ও দীর্ঘসূত্রীতার কারণে দুর্ঘটনায় যারা মৃত্যুবরণ করেন,তাদের পরিবারের কেউ আইনের আশ্রয় নিয়ে দীর্ঘদিন আদালতে আসা-যাওয়া সম্ভব হয় না বলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শোক ভুলে মামলা করা থেকে বিরত থাকে নিহতের পরিবার। অথচ একটি  জনকল্যাণমূলক রাস্ট্রের প্রধান দায়িত্বই হচ্ছে কিসে তার জনগণের সুবিধা। বাংলাদেশ আর কবে হবে তার জনগণের রাস্ট্র?সড়কে মৃত্যুর মিছিল নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতবছর ও চলতি বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভ হলেও পরিস্থিতির কোন দৃশ্যত পরিবর্তন নেই।সড়ক দুর্ঘটনায় যেসব জীবন ঝরে যায়, সেসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দায়িত্ব রাস্ট্রকেই নিতে হবে।হাইকোর্টের জারি করা ক্ষতিপূরণের রুল যেন পরিস্থিতি শান্ত করার উপায় হয়ে স্থায়ী রূপ লাভ না করে।

জীবনের মূল্য তো আর টাকা দিয়ে নিরূপন করা সম্ভব নয়। সড়ক দূর্ঘটনায় যারা মৃত্যু বরণ করেন কিংবা সারাজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করে বেঁচে থাকেন, তাদের পরিবারের এই ক্ষতির,এই শূন্যতার ,এই ভোগান্তির আর্থিক মূল্য কি টাকার অংকে কোন হিসাববিজ্ঞানী বের করতে পারবেন?পারবেন না,সম্ভব না। তারপরও ক্ষতিপূরণ বাবদ আর্থিক অনুদান বড় ক্ষতে কিছুটা হলেও শান্তির পরশ বুলায়,স্বান্তনা জাগায় মনে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তখন এই বলে অন্তত স্বান্তনা খুঁজে নেয়ার সুযোগ থাকে যে,রাস্ট্র ও তার আইন তাদের পাশে আছে।প্রিয়জন হারালেও ন্যায়বিচার পেয়েছে।আর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা গেলে সড়কে দূর্ঘটনার নামে মানুষ হত্যা বন্ধ হবে।

ঢাকা ট্রিউবিউনের বিপনন কর্মকর্তা মোঃ নাজিম উদ্দিন দায়িত্বরত অবস্থায় সড়কে খুন হলেও তার কর্মস্থল থেকে শোকবার্তা ছাড়া কোন অর্থসাহায্য পায়নি।এটা অবশ্য আমাদের দেশের চাকুরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর আর এক চরিত্র।মরে গেলে এরা যেমন বেঁচে যায়,ভুলেও যায় তাড়তাড়ি।নাজিমের মৃত্যুর পর বাস মালিক সমিতির সাথে ক্ষতিগ্রস্ত নাজিমের শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে ক্ষতিপূরণ বাবাদ আর্থিক অনুদান প্রদানের বিষয়টিও চাপা পড়ে গেছে। ঐদিকে দুই বাসের প্রতিযোগিতায় প্রথমে হাত হারালেও পরে মৃত্যু বরণ করা রাজিবের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ হাইকোর্টের করা ২ লক্ষ টাকা প্রদানের রুলও বাতিল হয়েছিলো।সরল দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে নাজিমের জন্য করা হাইকোর্টের জারি করা রুল একই ভাগ্য রবণ করতে যাচ্ছে।তাই এই ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ মহোদয়ের আশু পদক্ষেপ একান্ত প্রয়োজন।

যার যায় সে শুধু বোঝে হারানোর মূল্য। দিন যায়,বছর যায় সময়ের নিয়মে।একদিন এমনি করেই সময়ের ভেলায় ভেসে নাজিমের স্মৃতি বিস্মৃতির অতলে চলে যাবে। কিন্তু নাজিমকেও বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। পরোপোকারী,সদাহাস্যজ্জ্বল,লালমোহনের অন্যতম প্রিয়মুখ ছিল নাজিম। মাননীয় সাংসদ নূর নবী চৌধুরী শাওন ভীষণ পছন্দ ও ভালোবাসতেন নাজিমকে।আর সে কারণেই নাজিমের মৃত্যুর পর নাজিমের নামে সড়কের নামকরণের ঘোষনা দিয়েছিলেন। মাননীয় সাংসদ যদি তার অঙ্গীকার পূরণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তাহলে নাজিমের স্মৃতি যেমন বেঁচে থাকবে,তেমনি নাজিমের এতিম সন্তানেরা বাবার জন্য গর্বিত হবে। ওদের বাবা যে ভালো মানুষ ছিলেন,পরোপকারী ছিলেন,ছিলেন মাননীয় সাংসদের স্নেহভাজন তা গর্ব করে বলতে পারবে,পারবে বাবা হারানোর অপূরণীয় ক্ষতি ভুলে বুক ফুলিয়ে হাটতে।

বিচারহীনতার পথ থেকে রাস্ট্র দ্রুতই বের হয়ে আসতে হবে।ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে।নইলে এই বিচারহীনতা আর রুল জারির নামে প্রহসনতা একদিন এই দেশকে মৃত্যুপূরীতে পরিনত করবে পাকাপাকিভাবে।তখন না শাসক শ্রেণি,না রাজনীতিবিদগণ ,না আমজনতা কেউই আর বাঁচতে পারবে না।নাজিমের মৃত্যু আমায় ভীয়ণ কষ্ট দেয়,কারণ নাজিম ছিলো আমার অন্যতম প্রিয় স্বজন। নাজিমের স্ত্রীর চোখের পানি আমার বুকে হাহাকার তোলে।ওর রেখে যাওয়া সন্তানদের মুখের দিকে তাকালে বুকটা হুহু করে ওঠে। আর তাই নাজিমকে নিয়ে আমার ধারাবাহিক লিখে যাওয়া। এখনো কোন দুপুরে বন্ধুদের সাথে কোন রেস্টুরেন্টে খেতে বসলে নাজিমের মুখটা মনে পড়ে। মৃত্যুর দিন তিনেক আগে সেই দুপুরের খাওয়াই নাজিমের সাথে আমার আর বন্ধু শাহীনের শেষ খাওয়া। কিভাবে ভুলি এই স্মৃতি,এই ব্যথা!সেদিনও ঢাকা প্রেস ক্লাবে দাঁড়িয়ে একা বলেছি,নাজিম সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়নি,তাকে হত্যা করা হয়েছে।আজও তাই বলছি এবং এই হত্যার বিচার চাইছি।

বন্ধু ,তুমি আছো হৃদয়ে মম।।

--

সালেহ্ রনক
শিক্ষক,সমাজ সচেতন কর্মী,চেয়ারম্যান,অপরাজিতা ফাউন্ডেশন।
salehranak@gmail.com
১৭ মে ২০১৯
ঢাকা

Post a Comment

0 Comments