কুতুপালংয়ে শরণার্থীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা


বিডি নিউজ২৪.কম
মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে সোয়া ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে পৌঁছান। তারপর সেখান থেকে সড়কপথে উখিয়ায় কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে যান।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, পূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, হুইপ ইকবালুর রহিম, কক্সবাজার-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন নদভী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলম, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উখিয়ায় আসেন।
এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, কক্সবাজারের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি এবং আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক আগে থেকেই উখিয়ায় উপস্থিত ছিলেন।




সোমবার ওই শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, “রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে একাধিকবার পরামর্শ করেছেন। কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে তিনি এ সংকট সমাধানে পথরেখার ঘোষণা দেবেন।”
সেখানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা, অস্থায়ী নিবাস তৈরি, সাময়িক পুনর্বাসন, ভবিষ্যত করণীয় এবং তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত থাকবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের মুখে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের পরিস্থিতিতে দেখতে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকরাও বুধবার কক্সবাজারে যাবেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান।

গত ২৪ অগাস্ট রাতে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে হামলার ঘটনার পর থেকে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে চালানো হচ্ছে হত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞ। যারা প্রাণে বেঁচে গেছেন, তারা ছুটে আসছেন বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে।
গত কয়েক দশক ধরে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশে এই দফায় আরও তিন লাখের মতো রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বলে ইতোমধ্যে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
এই শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বার বার আহ্বান জানানো হলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি। রোহিঙ্গাদের নিজেদের নাগরিক হিসেবে মেনে নিতেও তারা রাজি নয়।  
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্ব দিয়ে নিরাপদে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক চাপ দেওয়ার একটি প্রস্তাব সোমবার বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
রোহিঙ্গাদের এই স্রোত ঠেকাতে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মতো কোনো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার তত্ত্বাবধানে একাধিক নিরাপদ এলাকা (সেইফ জোন) গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। এছাড়া সীমান্তে যৌথ টহলেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। কিন্তু কোনো প্রস্তাবেই মিয়ানমারের সাড়া মেলেনি।
সংকট নিরসনে সরকারের কূটনৈতিক উদ্যোগের কথা তুলে ধরতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সোমবার সংসদে বলেন, “মিয়ানমার সরকারের ধারাবাহিক অপচেষ্টা আমাদের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে।”
আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশ বলেন, এ সমস্যা মিয়ানমার সৃষ্টি করেছে, তাদেরকেই সমাধান করতে হবে। সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের সহযোগিতার দরকার হলে প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ তা করবে।
এই সঙ্কটের বিষয়টি জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনেও তুলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন