6/recent/ticker-posts

ভোলার মনপুরা নদীর পানিতে প্লাবিত ॥ পানিবন্দী মানুষ ॥ কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ, ৪ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি


গোপাল চন্দ্র দে,ভোলা  ॥


ভোলার মনপুরার উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে বাঁধ না থাকায় কয়েক দফা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার পর গত কয়েকদিনের নদীর পানিতে প্লাবিত ও বৃষ্টি পাতের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকার রবিশস্য। এতে আর্থিকভাবে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষীরা। এছাড়া পানি বন্দী হয়ে পড়েছে মানুষ।

বেড়িঁ বাঁধ না থাকায়  জোয়ারে পানিতে প্লাবিত হয়েছে ভোলার মনপুরা উপজেলার দুটি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি  গ্রাম । পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন  অর্ধ লক্ষাধিক  মানুষ। এতে ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের, ফসলি জমি । সাড়ে তিন কিলোমিটার বাধেঁর কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এদিকে  নদ নদীর পানি বিপদ সীমার ২০০ সেন্টেমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  ফলে ফসলি জমি সহ বিস্তীর্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন বানভাসি অর্ধ লক্ষাধিক  মানুষ।
পনিববন্দী আবস্থার শিকার রাসু বিবি জানান, বেড়ী ভাঙা দিয়ে পনি আসে। আজ কয়দিন পানির কারনে ঠিকঠাক রান্নাবারা করতে পরছিনা বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে কষ্টে আছি।

এনজিও থেকে ঋন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। এতে একদিকে যেমন তাদের বরিশস্য আবাদে আগ্রহ হারিয়ে গেছে অন্যদিকে স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যাওয়া ঋনের দায় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
বৃষ্টিতে ও পনিতে ফসলের ক্ষতির পর নতুন করে মনপুরার উপজেলার হাজিরহাট, মনপুরা এবং দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের হাজারো কৃষক এ মৌসুমে মুগ, ফেলন, মরিচ, চিনাবাদাম, তিল ও সয়াবিনসহ বিভিন্ন বরিশস্যের আবাদ করেছিলেন। এ ফসল আবাদ করতে গিয়ে তাদের এনজিও ও ব্যাংক থেকে মোটা অংকের ঋন নিতে হয়েছিলো।

কিন্তু বাঁধ না থাকায় গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও অতি জোয়ারের পানি এসব ফলস তলিয়ে গেছে। লবনাক্ত পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির রব্যিশস্য। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
সোনার চর এলাকার কৃষক জামান জানান, কৃষি ব্যাংক থেকে ২০ হাজর টাকা লোন নিয়ে তিনি ফেলন ডাল করেছেন কিন্তু জোয়ারের পানিতে সব তলিয়ে গেছে।
ঈশ^রগঞ্জ এলাকার নসু মিয়া জানান, ২ করা জমিতে মরিচ ও মুগ ডাল করেছিলাম, পানিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে। একই কথা জানান, খোকন। তিনি বলেন, ধারদেনা করে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ফসলের আবাদ করলেও পুরো ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
কাউয়ার টেক এলাকার বাবর আলী বলেন, জোয়ারের পানিতে ডাল, মরিচ ও চিনা বাদাম ভেসে গেছে, একই কথা আরেক কৃষক জাকির হোসেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগের বৃষ্টি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, মনে করেছি এবার ঘুরে দাড়াতে পারবো কিন্তু জোয়ারের পানিতে সব শেষ।
কৃষকরা জানালেন, অতি জোয়ারের ১০ গ্রামের কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে, যারা ফলস বিক্রির টাকা দিয়ে ঋন পরিশোধ করবেন তাদের মধ্যে অনেকেই এখন দিশেহারা। তাদের ঘুরে দাড়ানো কোন অবস্থাই খুজে পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, বিস্তীর্ন ফসলের ক্ষেতে যখন কৃষসকরা ফসল তোলার কথা ভাবছিলেন ঠিক তখনি এমন বিপর্যয় কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তারা। বিকল্প ব্যবস্থ্য়া ঘুড়ে দাড়ানোর নেই কোন উপায়। তাই চোখ-মুখে তাদের আতংকের ছাপ। ফসলে দিকে চেয়ে আছেন কৃষকরা। তবে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তিল, মুগ ডাল, ফেলন, চিনা বাদামের।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান , প্লাবন ও বৃষ্টি পাতের কারনে প্রায় ৪ কোটি টাকার রবি শস্যের ক্ষতি হয়েছে।

এ অবস্থায় দ্রুত বাঁধ মেরামত করে কৃষকদের বাচাঁনোর দাবি জানিয়েছেন  উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান  সেলিনা আক্তার চৌধূরী।

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন জানান, খুব শিগ্রই ক্ষতিগ্রস্ত দের সহায়তা ও বাধঁ নিমার্নের কথা।

Post a Comment

0 Comments