6/recent/ticker-posts

ঘর ঘন লোডশেডিংয়ে ভোলার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ভোগান্তি



ভোলা:
 ভোলায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনে ও রাতে বিদ্যুতের আসা যাওয়া যেন নিয়মিত রুটিন হয়ে দাড়িয়েছে। ২৪ ঘন্টায় অন্তত ২০/৩০ বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে। এতে ছোট বড় কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
ঠিকমত বিদ্যুৎ না পাওয়াতে বরফ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছেনা। বিদ্যুৎ না থাকায় প্রচন্ড গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়ছেণ মানুষ।
বিদ্যুতের লোডশের্ডিং নিয়ে পাল্টা পাল্টি অভিযোগ তুলছেন বিদ্যুৎ বিভাগ এবং পাওয়ার প্লান্ট কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বিদ্যুৎ উৎপানকারী প্রতিষ্ঠান সাড়ে ৩৪ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন মেশিন বিকল থাকায় ঠিকমত বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না অন্যদিকে পাওয়ার প্লাান্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, মেশিনে সমস্যা নেই, বিদ্যুৎ বিভাগ কি কারনে লোডশেড করছে তা শুধু বিদ্যুৎ বিভাগই বলতে পারবে।
এদিকে শুধু ভোলা সদর নয়, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, তজুমদ্দিন এবং চরফ্যাশন উপজেলায় চরম বিদ্যুৎ বিপর্যয় চলছে। এতে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার চলছে ওই সব উপজেলায়।
ওয়েজস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানী (ওজোপাডিকো) সুত্র জানিয়েছে, ওজোপাডিকো আওতায় ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন এবং চরফ্যাশন উপজেলার কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব এলাকায় বিদ্যুতের গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৪৭ হাজার।
অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতের আওতায় জেলার ৬ উপজেলায় এক লাখ ৫৮ হাজার গ্রাহক রয়েছে। সেখানে বিদ্যুতের চাহিদা ৩৩ মেগাওয়ার্ট।
গ্রাহকদের অভিযোগ, ভোলায় গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও যেন বিদ্যুৎ বিপর্যয় কাটছে না। ঘন ঘন লোডশেডিং সমস্যার কারনে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে প্রচন্ড গরম আর অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকা মানুষের নাকাল অবস্থা।
গ্রাহকদের আরো অভিযোগ, ভোলায় ৩৪.৫ এবং ২২৫ মেগাওয়ার্ট ক্ষমতা সম্পন্ন গ্যাস ভিত্তিক দুটি বিদ্যুৎ প্লান্ট থাকার পরেও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে ঠিকমত বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না ভোলার মানুষ। এরফলে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন গ্রহকরা। বিশেষ করে রাতে বেলায় বিদ্যুতের ঘন ঘর লোডশেডিং অতিষ্ট করে তুলেছে।
জানতে চাইলে ভোলা ওজোপাডিকো নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো: ইউসুফ বলেন,  বিদ্যুতের কোন লোডশেডিং নেই প্রকৃতিক বিপর্যয় এবং ট্রান্সমিটারে কিছু সমস্যা দেখা দিলে অল্প কিছুক্ষনের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
তিনি বলেন, ১৪০টি ট্রান্সফরমারের মধ্যে যে কোনটিতে সমস্যা হতেই পারে। তবুও আমরা স্বাভাবিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছি কিন্তু পাওয়ার প্লান্ট মেশিনে সমস্যা থাকায় তারা ঠিকমত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছেনা। 
যোগাযোগ করা হলে সাড়ে ৩৪ মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রর সহকারি ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের  পাওয়ার প্লান্ট সচল রয়েছে, সোমবারও ৩১ মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখছে, আমাদের এ মুহুর্তে কোন সমস্যা নেই।
ভোলা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মো: কেফায়েত উল্লাহ বলেন, আমাদের চাহিদার তুলনায় ৩ মেগাওয়ার্ট বিদ্যুতের সরবরাহ কম থাকায় কিছুটা লোডশেড করা হচ্ছে তবে সেটার পরিমান খুবই সামান্য।
তিনি বলেন, পিক আওয়ার সন্ধ্যা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত কিছুটা ফিডারে ফিডারে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে। তখন আর লোডশেডিং থাকবে না।
এদিকে গ্যাস ও বিদ্যুতের ভোলায় ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবী ভোলাবাসীর।

Post a Comment

0 Comments