6/recent/ticker-posts

ভোলার ১০২ পূজা মন্ডপে চলছে শেষ মহুর্তের প্রস্তুতি--আর বাকি আজকের দিন


গোপাল চন্দ্র দে ॥
২৬ সেপ্টেম্বর গতকাল ৯ আশ্বিন (মঙ্গলবার) দেবী দুর্গার আমন্ত্রন ও অধিবাস (ষষ্ঠী পূজা)’র মাধ্যমে শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। বাকি আর আজকের দিন তাই মন্ডপ গুলোতে চলছে শেষ মুহুর্তের কর্ম ব্যস্ততা।

এবছর ভোলা জেলার ৭উপজেলায় ১০৩টি ম-পে পূজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বাতিল হয়েছে চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জের ১টি পূজা মন্ডপের পূজা। ইতিমধ্যে জেলার অধিকাংশ পূজাম-পের প্রতিমা গড়ার মূল কাজ শেষ হয়েছে। এখন ম-পগুলোতে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রতিমা রংকরন, প্যান্ডেল তৈরী, মন্ডপ সাজসজ্জা আর অন্যান্য টুকিটাকি কাজের কর্মব্যস্ততা।
বিগত বছরের তুলনায় এ বছর দুর্গোৎসবে দ্বিগুণ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে আয়োজকদের।

এরপরও থেমে নেই প্রানের উৎসেবর কোনো আয়োজন। হাতে রয়েছে আর মাত্র এক দিন। তাই রকমারী আলোক সজ্জার মাধ্যমে সাজানো হচ্ছে ম-প ও তার আশপাশ। সবমিলিয়ে উৎসবের রঙে সাজছে দ্বীপের রানী ভোলা জেলা।


সরেজমিনে ম-প ঘুরে দেখা গেছে, ম-পগুলোতে চলছে উৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি। কোনো কোনো ম-পে চলছে রঙ-তুলির কাজ, আবার কোথাও কোথাও চলছে সাজ-সজ্জা, প্যান্ডেল নির্মান ও ডেকোরেশনের কাজ। অপরদিকে কেনা কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ঘরে বাইরে পূজা নিয়ে চলছে চরম উৎকন্ঠা উত্তেজনা ও ব্যস্ততা। জামা কাপড় তৈরি, কেনা-কাটায় সরগরম পোষাক বাজার গুলো। চারপাশে চলছে উৎসবের আমেজ।

ভোলা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সর্বশেষ তথ্যমতে, এ বছর জেলার ৭টি উপজেলার ১০২টি ম-পে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ২৫টি, দৌলতখান উপজেলায় ৬টি, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২০টি, তজুমদ্দিন উপজেলায় ১২টি, লালমোহন উপজেলায় ১৮, চরফ্যাশন উপজেলায় ১২টি ও মনপুরা উপজেলায় ৯টি। এবছর ভোলা সদর উপজেলায় পূজা বেড়েছে ৩টি। বাতিল হয়েছে চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জের ১টি পূজা মন্ডপের পূজা কার্যক্রম।

অপরদিকে আয়োজকদের মধ্যে বাপ্তা শক্তি সংঘ পূজা মন্ডপের সম্পাদক নেপাল চন্দ্র দে ও অনুজ কাহালীর মজুমদার বাড়ি পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর মজুমদার জানান। দুর্গোৎসবের ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ সময় তারা উৎসবমুখর ভাবে পূজা পালনের জন্য সরকারি অনুদান বৃদ্ধি করতে অনুরোধ জানান। এ বছরও ভোলা সদরের ওয়েষ্টার্ন পাড়ার দুটি পূজা ম-পে সবচেয়ে বেশি বাজেটের পূজা হচ্ছে বলে জানালেন ওয়য়েস্টার্ন পাড়ার দুটি মন্ডপের আয়োজকরা।

এ ব্যাপারে ভোলা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোরাঙ্গ চন্দ্র দে বলেন, উৎসবমুখর ভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ স্থানীয় সংসদ সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়রসহ বিভিন্ন সংস্থার সাথে মতবিনিময় করেছে।
তিনি আরো বলেন, সরকারি সংস্থাগুলোর বাইরে বাণিজ্যমন্ত্রী নিজস্ব তহবিল থেকে সদর উপজেলার প্রতিটি পূজা ম-পকে ৪০ হাজার টাকা করে অর্থসহায়তা দিয়েছেন। এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের কর্মীদের মাঝে বস্ত্র বিতরন করবেন বলে জানান। এছাড়াও মন্ত্রী পূজা চলাকালীন ম-প পরিদর্শন করার পাশাপাশি দরিদ্রদের শুভেচ্ছা উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ভোলা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ দুলাল চন্দ্র ঘোষ বলেন, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার অকালবোধন শুরু হবে। পূজাকে সামনে রেখে পূজা উদযাপন পরিষদের সকল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রতিটি ম-পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পূজা কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবককর্মী নিয়োগ করা হবে।

ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মো: মোকতার হোসেন জানান, শারদীয় দূর্গা পূজায় উৎসব হবে তবে শব্দ না। শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে ৪ স্তরের নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পূজা চলাকালীন দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন পূজা মন্ডপসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা গুলোতে বিশেষ নজরদারী রাখবে বলেও তিনি জানান। যাতে কেউ কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আঘাত না হানতে পারে জন্য আমরা সব সময় সজাগ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে শারদীয় দুর্গোউৎসব পালনে পুলিশের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগীতার আশ্বাস দেন পুলিশ সুপার।

Post a Comment

0 Comments