ঘূর্ণিঝড় আইলা: আজও কাঁদায় ভোলাবাসীকে


বিশেষ প্রতিনিধি।।
ভোলার উপকূল দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় আইলা। এক এক করে নয় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ঘূরে দাঁড়াতে পারেনি অনেকে। সে দিনটির কথা আজও ভুলতে পারেনি উপকূলের মানুষ। ঝড়ে স্বজন হারানো মানুষের কান্না যেনো আজও শোনা যায়। বিধ্বস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সে কথা মনে করে আজও আতকে উঠেন। মুহুর্তের মধ্যেই বিস্তীর্ণ জনপদ যেন লন্ড ভন্ড হয়ে ধ্বংস লীলায় পরিণত হয়। কাঁদায় স্বজন হারা মানুষকে।
কলাতলীর চরের বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, সাত ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়। মুহুর্তের মধ্যেই পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে যায়। সে ঝড়ের কথা কোনো দিনই ভোলার নয়।



দুর্গম ঢালচরের মৎস্য ব্যবসায়ী মাহাবুব বলেন, ওই ঝড়ের সময় আমরা কেউ ঝড়ের পূর্বভাস পাইনি। যার ফলে এখানে ক্ষয়-ক্ষতি বেশি হয়েছে। ঝড়টি মুহুর্তের মধ্যেই সব উপড়ে ফেলে দেয়। জেলেদের কয়েকশ' নৌকা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। চর নিজামের আলম ফরাজী বলেন, বইন্যায় সব তলায়া লইয়া যায়, এমন বইন্যার কথা কি ভুলতে পারি?

এদিকে, আট বছর পেরিয়ে গেলেও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার এখনও ঘূরে দাঁড়াতে পারেনি। উপকূলের মানুষের জন্য আজ পর্যন্ত সাইক্লোন সেল্টার ও মাটির কিল্লা নির্মাণ করা হয়নি। এখনও মানুষ পাচ্ছে না ঝড়ের পূর্বাভাস।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছে, সে ঝড়ে ভোলার দূর্গম কলাতলীর চর, ঢালচর, চর নিজাম, রামদাসপুর, মাঝের চর, হাজিপুর, কুকরি-মুকরী, কচুয়াখালীর চর, চর পাতিলার লক্ষাধিক মানুষ খাদ্য ও পানির অভাবে চার/পাঁচদিন অভূক্ত দিন কাটান। ছড়িয়ে পড়ে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ। জেলা প্রশাসনের অপ্রতুল ত্রাণ তৎপরতা সবার ভাগ্যে জোটেনি তখন।
২০০৯ সালের ২৫ মে এ দিনে ঘূর্ণিঝড় আইলা ভোলার উপকূলে আঘাত হানে। এতে মুহুর্তের মধ্যে ভোলা সদর, মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলায় ৩০ হাজার ঘড়-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। সেখানকার ৪০ গ্রাম ল--ভ- হয়। জলোচ্ছ্বাস হয় ছয়/সাত ফুট উচ্চতায়। পানিতে ভেসে যায় কয়েকশ’ মাছের ঘের। বিনষ্ট হয় হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। ঝড়ে প্রাণ হারান ১৮ জন। বেড়ি বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ জনপদ ও মানুষের ঘর-বাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝড়ের সময় শুরু হয় প্রাণ বাঁচাতে মানুষের দৌঁড়া-দৌঁড়ি, ছুটা-ছুটি। ঝড়ে কেউ হারিয়েছেন।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন