আদিল হোসেন তপু, ভোলা :
ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন
অনেক উচ্চতায়। তাই এই সম্পর্ক আরো অটুটু করার জন্য আরো অনেক চুক্তি হবে। তবে বাংলাদেশের
স্বার্থ রক্ষা করেই ভারতের সাথে যে কোন চুক্তি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী
তোফায়েল আহমেদ এমপি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
আমলেই গঙ্গার ন্যায্য পানির হিস্যা পেয়েছি।
তার আমলেই পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিচুক্তি করেছি। সীমান্ত চুক্তি
বাস্তবায়ন করেছি। শেখ হাসিনার আমলেই আমরা ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান সমস্যার
সমাধান করেছি। যেটুকু বাকি আছে সেটুকু এবারের সফরের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন
করা হবে। আশা করছি ভারতের সঙ্গে চিস্তা চুক্তিও সম্পন্ন হবে। আমরা মাথা উচুঁ
করে সমুদ্র সীমার মামলা করে বিজয়ী হয়েছি।
বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা সমুদ্র সীমা আদায় করতে
পারেনি। গঙ্গার পানি আনতে পারেনি। পার্বত্য চট্টগ্রামের
শান্তিচুক্তি করতে পারেনি। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। অথচ এখন ভারত-বাংলাদেশ
সফরের বিরুদ্ধে কথা বলছে।
শনিবার সকালে ভোলা সদর উপজেলার
শিবপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাণিজ্যমন্ত্রী
এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপি
যখন ক্ষমতায় থাকে তখন হয় ভারত প্রীতি, আর
যখন ক্ষমতার বাইরে থাকে তখন ভারত বিরোধী।
খালেদা জিয়াও তো দিল্লী গিয়েছিলেন। লালগালিচা সংবর্ধনা
পেয়েছিলেন। কিন্ত গঙ্গার পানি নিয়ে কথা বলেননি। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা
যখন জানতে চেয়েছিলেন তখন খালেদা জিয়া বলেছেন এটা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। সেই নেত্রীর
কাছে আমরা কি আশা করতে পারি।
নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি
নিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারীর আগে ৯০ দিনের মধ্যে যে কোন দিন
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত
হবে। তাই সাধারণ
মানুষকে বুঝাতে হবে শেখ হাসিনা যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখনই দেশে উন্নয়ন হয়। প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা আজ দেশের নেতা নন, আন্তর্জাতিক
বিশ্বের একজন বরেণ্য ও দক্ষ রাষ্ট্রপ্রধান।
তিনি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা
করার পথে দিপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছেন। বাংলাদেশ এখন আর্ন্তজাতিক বিশ্বে একটি মর্যাদাশালী দেশ। আওয়ামী লীগ
সরকারের আমলে ভোলায় ব্যাপক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ভোলার প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম শহরে রুপান্তরিত হয়েছে। যেই ভোলায় কোন
রাস্তাঘাট ছিলনা, বিদ্যুৎ ছিলনা। সেই ভোলায় ব্যাপক
রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। নদী ভাঙনের
হাত থেকে ভোলাকে রক্ষায় কাজ চলছে। ভোলা-বরিশালের ব্রিজের কাজও শুরু হবে। ভোলা জেলার
রাস্তা-ঘাট ও ব্রিজ নির্মানের জন্য ৪৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। আগামী কিছুদিনের
মধ্যেই এর কাজ শুরু হবে। এ কাজ সম্পন্ন হলে ভোলায় আর কোন রাস্তা কাচা থাকবেনা। এসব উন্নয়ন
হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। বাংলাদেশের সব গ্রাম আজ শহরে রুপান্তরিত হয়েছে। এখন বিদেশীরা
বলেন-বাংলাদেশের বিস্ময়কর উত্থান হয়েছে।
বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। এ দেশ সব দিক
থেকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী। এ দেশ এখন উদীয়মান অর্থনৈতিক উন্নয়নের দেশ। ভোলাও অর্থনৈতিকভাবে
একটি উন্নত জেলা। ভোলা হবে বাংলাদেশের ভেতর সর্বশ্রেষ্ঠ উন্নত ও সমৃদ্ধ শিল্পনগরী
জেলা। কারন ভোলায়
পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাস রয়েছে। সেই গ্যাস দিয়ে গ্যাসভিত্তিক শিল্প, কল-কারখানা স্থাপন করা হবে। দেশ-বিদেশের
অনেক ব্যবসায়ী ও শিল্পদ্যোক্তা ভোলায় জমি কিনে শিল্প, কল-কারখানা
স্থাপন করেছে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাছেত মিয়ার সম্মেলনে বিশেষ
অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন,পৌর মেয়র মনিরজ্জামান, জেলা আ’লীগের যুগ্ন-সম্পাদক জহিরুল ইসলাম
নকীব,এনামুল
হক আরজু সদর উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক
মইনুল হোসেন বিপ্লব,মুক্তিযোদ্ধা
সংসদের কমান্ডার দোস্ত মাহামুদ, ডেপুটে কমান্ডার শফিকুল ইসলাম,ভাইস চেয়ারম্যান মো: ইউনুস, ভোলা সদর উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আজিজুল ইসলাম। সম্মেলনে
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।
0 Comments